শনিবার, ২৮ মে, ২০১৬

থানছির দুর্গম অঞ্চলের মানুষ ভবিষ্যতে নিরাপদে থাকতে পারবে তো?

বান্দরবান জেলার থানছির যে অঞ্চলে এখন দুর্ভিক্ষ চলছে সে এলাকাটি এখনো পাহাড়িদের জন্য সুরক্ষিত বলা যায়। সে এলাকায় পাহাড়িরা এখনো নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে। সেখানে পাহাড়ি মেয়েরা নিরাপদে জুমক্ষেতে কাজ করতে পারে, কুয়া-ঝিড়ি থেকে পানি আনতে যেতে পারে, একা একা বাড়িতে থাকতে পারে। এক সময় গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামই ছিল এমন দুর্গম কিন্তু পাহাড়িদের জন্য নিরাপদ এলাকা। শত কষ্টের মাঝে জীবন-যাপন করলেও তারা ছিল নিরাপদে, তখন ছিল না সেটলার নামক কীটদের যন্ত্রণা। কিন্তু কালক্রমে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় রাস্তাঘাট হয়েছে, হাট-বাজার বসেছে। আর সেই সাথে বসানো হয়েছে ক্যাম্প, পুনর্বাসন করা হয়েছে সেটলার কীটদের। এরপর পাহাড়িদের উচ্ছেদের পালা শুরু। তারা নিজ গ্রাম-বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে যায়। আর পাহাড়িদের ফেলে যাওয়া জায়গা-জমিগুলো জবরদখল করে নেয় সেটলার কীটগুলো।

থানছির যে অঞ্চলটি এখন দুর্গম ও দুর্ভিক্ষ কবলিত বলে প্রচার করা হচ্ছে এই অঞ্চলটির ভবিষ্যত কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। দুর্ভিক্ষের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শাসকচক্র ভবিষ্যতে সেখানে হয়তো উন্নয়নের নানা প্রজেক্ট হাতে নেবে। অন্যান্য এলাকার মতো সেখানেও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ঘটাবে, ক্যাম্প বসাবে, হাট-বাজার বসাবে, বসাবে সেটলার কীটদের। আর তখন পাহাড়িদের অবস্থা কি দাঁড়াবে? এখন জংলী আলু-কচু খেয়ে দুর্ভিক্ষের মাঝেও যে পাহাড়ি মানুষগুলো নিরাপদে-নির্বিঘ্নে নিজেদের কষ্টে গড়া বসতবাড়িতে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারছে, তখন কি তারা সেভাবে সেখানে বসবাস করতে পারবে?

নিরন চাকমা
২৮.০৫.২০১৬


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন