শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৫

পাহাড়ে সকল সহিংসতার জন্য কথিত “চাঁদাবাজি’কে দোষারোপ ফ্যাসিবাদী দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন

- নিরন চাকমা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী 
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পাহাড়ে সকল সহিংসতার জন্য কথিত “চাঁদাবাজি’কে দোষারোপ করেছেন। এটা তার ফ্যাসিবাদী দৃষ্টিভঙ্গিরই সুস্পষ্ট প্রতিফলন। অতীতের ফ্যাসিস্টরাও একই সুরে কথা বলেছিলেন এবং পাহাাড়ে পাহাড়ি জনগণের ওপর অন্যায় দমন-পীড়ন চালিয়েছিলেন।

চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন পরর্বতী গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে তাঁর উচিত ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার আরো গভীরে যাওয়া এবং এটা যে রাজনৈতিক সমস্যা তা অনুধাবন করা। তাঁর এটাও মনে রাখা উচিত যে, শুধুমাত্র কথিত “চাঁদাবাজি” বন্ধ করলেই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ এ সমস্যার জন্য মূলত রাষ্ট্রীয় পলিসিই দায়ী। রাষ্ট্রই নানা কূটকৌশলে এ সমস্যা জিইয়ে রেখেছে। তাই এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্যও রাষ্ট্রকেই উদ্যোগ নিতে হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এটাও মনে করিয়ে দেয়া দরকার যে, ২০২২ সালের ২৬ মে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদসহ হর্তাকর্তারা রাঙামাটিতে গিয়ে পাহাড়িদেরকে (তাদের ভাষায় *সন্ত্রাসী” “চাঁদাবাজ”) ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়েছিলেন। বেনজীর সাহেবতো গর্ত থেকে বের করে আনার হুংকার করেছিলেন। কিন্তু আজ তাদের অবস্থা কী হলো?

অন্তর্বর্তী সরকার ও সরকারের উপদেষ্টা মহোদয়গণকে এটা ভালো করে অনুধাবন করতে হবে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সমস্যা সেটা রাজনৈতিক সমস্যা। তাই রাজনৈতিকভাবে সকল পক্ষের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানের পথ বের করতে হবে। কোন কিছু অজুহাত সৃষ্টি করে বলপূর্বকভাবে-দমনপীড়ন চালিয়ে এর সমাধানের চেষ্টা করলে জটিলতা বাড়বে বৈ কমবে না।

আমরা আশা করবো অতীতের ফ্যাসিস্টদের পথ অনুসরণ না করে অন্তর্বর্তী সরকার অনতিবিলম্বে পাহাড়ের সমস্যা সমাধানের জন্য সঠিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং পাহাড়সহ গোটা দেশে একটা স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।#

০৪.০৪.২০২৫

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন